View Single Post
  #62  
Old April 8, 2017, 06:01 PM
Eshen's Avatar
Eshen Eshen is offline
Cricket Guru
 
Join Date: August 27, 2007
Posts: 14,497

কোচ এপারে তো ক্রিকেটাররা ওপারে

Quote:
শ্রীলঙ্কায় টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে বাংলাদেশ দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় বসেছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। সে সভার পরই প্রথম টি-টোয়েন্টির টসের সময় এ ফরম্যাট থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। তবে তার আগে জাতীয় দলের হেড কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহে সম্পর্কে যুক্তি দিয়ে বিস্তর অভিযোগও করেছেন তিনি। সে সভায় উপস্থিত বিসিবির অনেক পরিচালকের একজনের বিস্ময়, ‘কোচের ব্যাপারে ক্রিকেটারদের এমন মনোভাব ঘুণাক্ষরেও আঁচ করতে পারিনি!’

সে রাতের সভায় কোচ বনাম ক্রিকেটার সম্পর্কের দাঁড়ি টানেন মাশরাফি একটি উপমা দিয়ে, ‘কোচ যদি সমুদ্রের এপারে হয় তো আমরা ক্রিকেটাররা ওই পারে!’

সভার সূত্র ধরে জানা, কোচের বিরুদ্ধে এত যে অভিযোগ, তা কেন এত দিন জানানো হয়নি— পাল্টা প্রশ্ন করা হয়েছিল মাশরাফিকে। জবাবে তিনি যা বলেছেন, তা দেশীয় ক্রিকেটের বর্তমান হালচাল—অভিযোগ করতে গিয়ে আক্রোশের শিকার হওয়ার ভয়ে এত দিন কেউ মুখ খোলেননি।

কোচ চেয়েছিলেন বলেই প্রবল অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিউজিল্যান্ড সফরের আগে অস্ট্রেলিয়ায় অকারণ ক্যাম্পের খরচ বহন করেছে বিসিবি। ২৭ জনকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ, প্রতি সফরেই হুটহাট একে-ওকে ডেকে পাঠানো, সবই হয় কোচের চাহিদাপত্র মেনে। এখানে অধিনায়ক, নির্বাচক কমিটির কোনো ভূমিকা নেই। অবশ্য এর ধারও ধারেন না হাতুরাসিংহে—নিজে চাহিদা সরাসরি পেশ করেন বিসিবি সভাপতি বরাবর। আর কোচ চেয়ে কিছু পাননি, এমন নজির এ আমলে নেই।

বোর্ডের বাড়তি খরচ নিয়ে আপত্তি থাকার কথা নয় ক্রিকেটারদের। তাঁদের আপত্তি, হুটহাট খেলোয়াড় ডেকে দলে অস্বস্তি তৈরি হওয়া নিয়ে। চাপে রেখে কখনো কখনো ফললাভ হয়। তবে প্রতিনিয়ত চাপে দীর্ঘ মেয়াদে কুফলই মেলে। সেদিনের সভায় উদাহরণ হিসেবে মমিনুল হককে তুলে ধরেছিলেন মাশরাফি। তিনি নাকি বলেছিলেন, ‘মমিনুলকে বলা হলো অফস্পিন খেলতে পারছে না। সেটা ঠিক না করে ওকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। অথচ আমাদের উচিত ছিল ওর সমস্যাগুলো শুধরে দেওয়া। তাতে মমিনুল হতো আমাদের (চেতেশ্বর) পূজারা। ’ কিন্তু এই সেদিনও বাংলাদেশের ‘ব্র্যাডম্যান’ মমিনুল এখন কোচের খরচের খাতায়। গুঞ্জন আছে, তাঁকে ইমার্জিং কাপে না খেলানোরও পরামর্শ এসেছিল টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে। হাতুরাসিংহের সংসারে আরো দুরবস্থা ইমরুল কায়েসের। অবশ্য এ নিয়ে চতুর্থবার অবস্থান বদলে বাঁহাতি এ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের নাকি গুণমুগ্ধ হয়েছেন হাতুরাসিংহে, সেটা প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিংয়ের কারণে।

মাশরাফি অভিযোগ করেছেন কোচের নিজের ভুল বেমালুম অস্বীকার করা নিয়েও। ওয়েলিংটন টেস্টের প্রথম ইনিংস ৫৯৫ রানে ঘোষণা করতে রাজি ছিলেন না মুশফিকুর রহিম। কিন্তু কোচ নাকি জোরাজুরি করেন, ‘তুমি না দিলে আমিই ইনিংস ডিক্লেয়ার্ড করছি!’ অতঃপর ইনিংস ঘোষণা করেন মুশফিক এবং ব্যর্থ দ্বিতীয় ইনিংসে হারে বাংলাদেশ। নিজেদের সামর্থ্যের বিষয়টি মাথায় রেখেই ইনিংস ঘোষণা পিছিয়ে দিয়ে হারের পথটা পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন মুশফিক। উল্টো হারে দায় বর্তায় দ্বিতীয় ইনিংস ব্যর্থতার ওপর।

এমন আরো অনেক অভিযোগই সে সভায় তুলেছিলেন মাশরাফি। এমনকি কোচকে সে সভায় উপস্থিত রেখেই কথাগুলো নাকি বলতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কোচকে আর ডাকেননি বোর্ড সভাপতি।
Reply With Quote